
সঞ্জীব চক্রবর্তী
পাড়ার মেয়ে বিশ্ব একাদশে ভাবা যায়? রিচার বাবা গবাদার ক্রিকেট জার্নি স্বচক্ষে দেখেছি পাড়ার কলেজ মাঠে। কাঠের বলে সাধারণ মানের খেলোয়াড় হলেও আশ্চর্য হতাম টেনিস বলে ব্যাটিংয়ের দক্ষতা দেখে। টেনিস বল জোরে মারলেও খুব বেশি দূরে যায় না কিন্তু গবাদার চেয়ে দূরে টেনিস বল মারতে কাওকে কখনো দেখিনি। আমরা মজা করে বলতাম যে বিশ্বকাপ টেনিস বলে হলে গবাদা নির্ঘাত বিশ্বসেরা হত। কে জানত মজা করে বলা কথাগুলো এভাবে সত্য হবে একদিন আর গবাদার মেয়ে রিচা বিশ্বকাপে ভারতের সেরা ভরসা হয়ে শেষপর্যন্ত বিশ্ব সেরা একাদশে স্থান পাবে। কয়েক বছর আগে মহিলা দলের বর্তমান অধিনায়ক হরমনপ্রিত কৌর এই কলেজ মাঠেই এসেছিল বাঘাযতিন ক্লাব আয়োজিত মহালয়ার ক্রস কান্ট্রি রেসে বিশেষ অতিথি হিসাবে। মনে পড়ে সামনে দাঁড়িয়ে হতবাক হয়ে দেখছিলাম ওকে আর ভাবছিলাম মহিলা ক্রিকেটের সবচেয়ে হার্ড হিটার মেয়েটি এত শক্তি পায় কিকরে? নির্ঘাত পাঞ্জাবি বলেই হয়ত সম্ভব বলে ভেবেছি। কে জানত হরমনপ্রিত সেদিন যেখানে দাঁড়িয়ে মহিলা ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রেখেছিল ঠিক তার দশ মিটার দূরের পিচ থেকেই উঠে আসতে যাচ্ছে ভারতের পরবর্তী প্রজন্মের হার্ড হিটার আমাদেরই ঘরের এক ছোট্ট মেয়ে। যে কিনা শেষ পর্যন্ত হরমনপ্রিতদের ছাপিয়ে বিশ্ব একাদশে স্থান পাবে। একদিন উইকেট কিপার প্রশান্ত সাহার কিপিং দেখেছি এই কলেজ মাঠেই, দেখেছি তারই ছেলে ঋদ্ধিমান সাহাকে বিশ্বের সেরা উইকেট কিপার হতে। আজ গবাদার মেয়েকে একইভাবে এতবড় হতে দেখাটা সত্যিই অভিভূত করল। কিছু সাফল্য আর ব্যক্তিগত থাকে না, জাতির হয়ে দাঁড়ায়।