স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রীর হাতে শাখা সিঁথিতে সিঁদুর এই দৃশ্য হয়তো এ তল্লাটে খুঁজে পাওয়া দুর্লভ। হিন্দু সমাজেও এ ধরনের আচরণ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় বলে নিশ্চিত জানেন মঞ্জু দেবী। ইসলামপুর শহরের থানা কলোনির বাসিন্দা শ্রীমতি মঞ্জু রায় হিন্দু রীতিনীতির বেড়াজাল ভেঙে দিয়ে এক ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন।

মঞ্জু রায়ের স্বামী প্রয়াত স্নেহাশিস রায় পেশায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিয়মের কর্মচারী গত এক বছর আগে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছিলেন। মঞ্জু দেবীর এক কন্যা সন্তান এবং এক পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামী প্রয়াত হওয়ার পরে প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং পেনশনের টাকা দিয়েই তাদের সংসার চলে। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে ঘোরতর বিরোধী মঞ্জু দেবী বৃহস্পতিবার নিজের প্রয়াত স্বামীর প্রতিকৃতিকে সামনে রেখে রীতিমতো পুরোহিত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে হাতে শাখা এবং সিঁথিতে সিঁদুর তুলে নিলেন।

মায়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে মঞ্জু দেবীর মেয়ে শ্রেয়সী রায় ও ছেলে। পাশাপাশি মঞ্জু রায়ের এই সিদ্ধান্তে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন আত্মীয় থেকে প্রতিবেশীরাও। যদিও পুজো করতে আসা পুরোহিত জানিয়েছেন, হিন্দু রীতিতে এই ঘটনার কোন সংস্কার নেই, এই ঘটনা হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে, বাকিটা মঞ্জু দেবীর ব্যক্তিগত বিষয়।

এদিকে ইসলামপুর থানা কলোনির বাসিন্দা তথা সমাজসেবী নিবেদিতা সাহা বলেন, মঞ্জু দেবীর তার স্বামীর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা সম্মানকে আমি সম্মান জানাই তবে এ বিষয় সমাজে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই বড় বিষয়। মঞ্জু রায় জানিয়েছেন, প্রয়াত স্বামীকে সম্মান জানাতেই তার এই শাঁখা সিঁদুর পড়ার সিদ্ধান্ত। সামাজিক সংস্কার হিন্দু রীতিনীতির পরোয়া না করেই বিভিন্ন যুক্তির পাশাপাশি বিধবা মহিলাদের প্রতি সমাজের কুনজর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মঞ্জু দেবীর এই সিদ্ধান্ত।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *