রবি আড্ডায় লুৎফর রহমান
যাব শিয়ালডাঙা,বারেও বেস্পতি
তবু মন শুধু খচ খচ করেই যাচ্ছে….।
সত্যি বলতে সমস্যাটা ঐ হাতেমের মাকে নিয়ে…!
কি ভাগ্যে একবার এই হাতেমের মা
ঐ শিয়ালডাঙা থেকে বাস টাস যাহোক কিছু ধরে
আমার দোকানে এসেছিল ওষুধ নিতে
এসেই
হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম,বলে, বসল একটা টুলে!
আমি আরেকজনকে ওষুধ বুঝিয়ে দিয়ে সবে বসেছি,পুরনো রুগী পরিচিত ওষুধ বলে রুগীকেই শুধিয়েছিলাম
বলুন ত কোন ওষুধ কখন কিভাবে খাবেন?!
তাই নিয়ে তার প্রথম সংশয়!
…… এই নাকি তুমি ডাক্তার
কোন ওষুধ কখন খায়,এখনো,তাও জাননা?
এই যে আমি আসলাম,সেই শিয়ালডেঙা থেকে,এখন ত জাহানডাও বেঘোরে যাবে,দেখা যায়!
সেই প্রথমদিনই
বুঝলাম ইনি যে সে মানুষ নয়,পুরোই হাতেমের মা
সাকিন
শিয়ালডাঙা,রীতিমত বাসের ভাড়া গুনে
উনি
আমার মত হাতুড়ের কাছে এসেছে।আরো জানলাম
কোথাকার কোন সনেকপুর,
সেই গ্রামের মোহন তালুকদার ওনার বেয়াই
তার হাঁটু
কবে খুলে গিয়েছিল,বনগাঁ হাসপাতাল মেরেছিল ফেল
আমার ওষুধেই নাকি সেই মোহনের খোলা হাঁটু জুড়ে গিয়েছে!
,এখন সে শুধু ফুরফুরা কেন পারলে আজমেড় শরীফও একা যেতে পারে…
সেই খবর শুনেই আমার কাছে আসা এই হাতেমের মায়ের!
এসেছে সাত সকালবেলা,নাকে মুখে কোন রকমে একদলা ভাত গুঁজে,বাস ধরে সোজা এই বিষ্ণুপুর!
এসেই ত
ফেরে পড়লেন জোর,তার প্রথম আক্ষেপ,আমি নাকি
ওষুধের তরিকায় যতটা হাতুড়ে ততটাই উদলা চোখে মুখে !
কলম স্টেথো হাতে আমি উঠে দাঁড়ালাম তার মুখ সোজা।
মানুষকে সহজ ভাবা যে কত বিড়ম্বণার,মনে মনে বিরক্ত হয়েই
বললাম,সমস্যাটা কি বলেন!?
মানুষটা বয়সে যাই হোক,গতরে ঝরা পড়া নয়।
মুখও চলে উপুড় কলসীর মত বুগবুগ করে।
বলল
বলব যে, তা মুখের কথা শুনবা, না, টিপে টুপে বুঝবা।
হাসলাম।
কিন্তু মেজাজটা টোকে গেল।
শুধোলাম
আপনি কি আলাপ জুড়বেন, না,বিয়াদ্দির কথা বলবেন,আগে ভাবুন,সেই ফাঁকে আমি একটু জিরিয়ে নিই বুঝলেন!
রেগে যাচ্ছ বাবা? বুড়ি এবার ধা করে মনে মরে গেল যেন।
বলল
এতকাল বুকি পিঠি করে বয়ে বেড়াচ্ছি যে অসুখ
বনগাঁ বাগদা হাসখালি বয়রা পর্যন্ত
কাড়ি
কাড়ি টেকা তো কম পিন্ডি চটকালাম না
এমনকি
বয়রার হিতেন ডাক্তার চাকু পর্যন্ত করেলো
তার তো শুনেলাম ডাকতারী টা লন্ডন ফেরত…
আসলে ত
সব আপদ বালায়,কান চেনে না আবার কড়কে দেয়!
তা
তুমি ঢোল না জয়ঢাক,তাকি একটু বাজিয়ে দেখবো না বাপ,এতে কেউ রাগ করে….বলো!
যাহোক
হাতেমের মা এরপর আমাকে যা শোনাল সে এক কিস্যা!
অসুখটা তার বাতকর্মের
আর আমারও অবাক হওয়ার সেই শুরু।
বাতকর্ম করতে
তার দিনক্ষণ লাগে না, মন কিম্বা মানুষ লাগে না
সে
হাঁটলে পাঁদে –বসলে পাঁদে –এমনকি কাঁদলেও পাঁদে….!
এই অসুখ বয়রা কিম্বা সুখখালীর বিখ্যাত সার্জেন হিতেন চক্রবর্তীর মত ডাক্তার অস্ত্র করেও সারতে পারেনি।
আক্ষেপ তার সেটাও নয়,আসল দুঃখটা তার অন্যখানে!
জয়বাংলার কালে সে বিলে গিয়ে স্নান করতো একা,নারকোল গাছে উঠে যেত, দুবার মাত্র দম নিয়ে সে ভোরোর দীঘি এপার ওপার করে ফেলত,তাহলে এখন তার বয়স কত সহজে অনুমান করা যায়!
কিন্তু
আমাকে প্রায় নিজের বুকের কোলে বসিয়ে যেন কেউ না শোনে
কেউ না জানে এমনভাবে বলল
…..নাম তার হাতেমের মা হলে কি হবে
তারা আসলে জাতিতে মালো,বাপের নাম রসিক হালদার ঠাকুরদার নাম দুকড়ি হালদার…
তো
সেবার দেশে দেশে নাকি দুলে মালোদের খুব একটা অপদস্ত ভাব
এতে তার বাবাজ্যেঠারা গিয়ে উঠল এক গাজীর দফতরে
সেই দপতরী পাঠিয়ে দিল এক
পরোয়ারদেগারকে।
তো সবাই ওজু টজু করে হাজির ,কলেমা নিয়ে মুসলমান হতে হবে,হলোও সবাই,মানে একলহমায় গোটা মালোপাড়া রাতারাতি সব মুসলমান হয়ে গেল
কেবল বাঁধ সাধল এই হাতেমের মা।
শরীর তার ভোমরের মত দুলুনি হলে কি হবে
যতবার
সে ওজু করে গিয়ে ইমামের সামনে বসে,অমনি সে ভকভক করে পেঁদে ফেলে! ফলে আর সবার মত
কলেমা তার হল না।
বাদ সে পড়ল বটে,তবে,সেই রাতেই তার ধরা-বিয়ে হল
কামদেবপুরের হাতেমের বাপের সঙ্গে।
কোলে হাতেমও এল বছর ঘুরতে না ঘুরতে
তারপর ওসমান হল কেলেবুড়ি মানে শুকতারা
হল
এতেই কিনা কেজানে,সবকিছু কোমন চাপা পড়ে গেল
দেখতে দেখতে,পাখি যিরাম নিজের পালকে
নিজে ফতুর হয়
হাতেমের মায়ের বুক খালি করে চলে গেল হাতেম
কানসোনা
বিয়ে করে চলে গেল ওসমানও মেহেরপুর
শুকতারারও বিয়ে হল খলিদপুর
ছিল একটা ভিটে
তাও হাতেম ওসমান বিক্রি করে নিয়ে গেল
সব
শ্বশুরবাড়ী….
দেখতে দেখতে কেটে গেল ৪০.কিম্বা ৫০ কিম্বা ৬০
কিম্বা ৭০ বছর!
এখন এই অসুখটা সারলে….!
মিথ্যা কথা বলব না
দিলাম হাতেমের মাকে ওষুধ।
আর
আতান্তরে পড়লাম আরো।
হাতেমের মা ফিরে এল দিন পনের পরে।
এসেই
ভাল নয় মন্দ বলা নয়,
একদম সোজা
নাকে কাঁদা আর দুপায়ে আমার বুক পেট সব চটকাতে শুরু করে দিল
এমন
যে আমার পেটের
অন্নপ্রাশনের ভাত কবে খেয়েছি,তাও উঠে এল।
আমাকে হাতুড়ে ত বটেই
এমনকি
ডোম ডোকলা পর্যন্ত বলতে গিয়ে
হাতেমের মা রাগের মাথায় এত কথা আমাকে বলল…
যে,অত কথা মহেঞ্জোদরো থেকে নরেনমোদী পর্যন্ত আর কেউ বলতে পারবে না।
দিলাম তাকে ফিরৎ ঐ ২৪০ টাকা।
শুধু তাই নয়,
আপ-ডাউনের বাস ভাড়া মিলিয়ে তাকে দিতে হল আরো বিশ টাকা
এবং পানদোক্তা বাবদ দিতে হল আরো দশ টাকা
তো
সেই হাতেমের মা আমাকে খবর পাঠাচ্ছে
এরে তারে দিয়ে রোজ
যাকে বলে মরণ খবর!
অথচ
তাকে আমার মনে করতেই কেটে গেল পুরো আট দশটা দিন।
তো
গেল পরশু মেদেরহাটের সাধু হাওলাদার এল খুব সকালবেলা।
নামেই সে সাধু,আসলে সে কোন সন্ন্যাসী টন্ন্যাসী কেউ না।
যেকোন কারণেই হোক
তার বউ ছেলে মেয়ের কিম্বা জ্ঞাতিগুষ্টির কারো কোন অসুখ বিসুখ হলে
সে
আমার কাছেই তাদের আনে
আজ প্রায় ১০ বছর হতে চলল…!
এসেই
খুব একটা কাকুতি মিনতি শুরু করে দিল সাধু।
দেখলাম
সেও আমার মত
মানে
হাতেমের মা কেন আমাকে এমন মরণ খবর পাঠাচ্ছে একের পর এক
,তা,
সে নিজেও জানে না!
তবু আমি
একরকম ঘেন্না পিত্তির মাথা খেয়েই তখনি কথা দিলাম
শিয়ালডাঙায় যাবার,মানে,হাতেমের মায়ের কাছে যাবার!
কিন্তু
আজ বেরিয়ে,মন শুধু শুধু আমার কেন যে কু গাইছে
মেজাজ কেন যে খিঁচে যাচ্ছে শুধু শুধু
নিজেই বুজছি না!
অমন
ঢোকোলপেঁদি মানুষের জন্য এই যে দশ কিমি পথ ঠ্যাঙান….
গিয়ে,
যে কোন আলামোতে পড়তে হবে,সেইসব ভেবেই বোধয়
মনেরও আমার জ্বর এল খুব!
যাক
শিলিন্দা পর্যন্ত গিয়ে বাঁকা পথ ধরলাম
কেননা
ঠাকুরবাড়ী ঘোড়াঘাটার দিকে
মানুষের ঐ গিজ গিজ ফিজ ফিজে ভিড় ত এড়ান যাবে…
কিছু না হোক
চামটা মথুরাপুরের মাঝে অমন লম্বা যে চেলকোর বিল
তার দুপাড় জুড়ে দুরন্ত খ্যাকশিয়েলের দৌড় ত দেখতে পাব!
কপাল ভাল থাকলে নেমেও যেতে পারব শুলকোবিলের চরায়—-
ওখানে চরাহাঁসের খেউড় শোনা যায় খুব!
শেষমেষ
যখন শিয়ালডাঙা পৌঁছলাম,তখন বড়রাস্তায়
বাস লরীর চলাচল
একটু কমে গেছে,মোড়েই যে চায়ের দোকান,তাও প্রায় ফাঁকা।
হাতেমের মা কি এমন বস্তু, বোঝ, যে,তাকে এ তল্লাটে চেনেনা
এমন এক বদ্ধ পাগল পাওয়াও খুব দুষ্কর!
গিয়ে দেখি
হ্যাঁ,ঠিক দোকানি যেমন বলেছিল তাই
সামনে
দুইপা মেলিয়ে হাতেমের মা একটা নড়ি হাতে বসে আছে এক কুলগাছেরই নীচে।
পাশেই বসলাম,তারই চেটাইতে!
ভেতরে যাই হোক,মুখে বড়ফাই করে শোধালাম
বেপার কি হাতেমের মা!!
এমন করে যে ডাক পাড়ছ
তার কি কারণ,… বলোদিনি!
হাতেমের মা
নাক একবার বাঁয়ে আরেকবার ডাইনে ঝেড়ে নিল।তাতেই
দেখলাম শরীর তার বেশ কাবু হয়েছে ইতিমধ্যে।
বলল,
সামনে দিয়ে যাই
আর পিছন দিয়ে যাই,ওপারে ত যেতি হবে হোসেন।
এই দেখ
পেটে কতগুনু ছেলে পিলে ধরেলাম
গোনায় গুনতিতে মোট তিনটে…।
ভাত চাইনে ভরণও চাইনে
কিন্তু
তাদের মুখটা দেখেই ত আমার বাঁচা
তারাও
সব কেটে পড়লে একেক করে….!
ছিল
হাতেমের এক ছেলে এই ভিটেতে
সকাল সন্ধে তার মুখটা দেখতি পাতাম
সেও
আজ বারোদিন হল চলে গেল শ্বয়ূরবাড়ী।
আমি এবার উসপিস করছি দেখে হাতেমের মা
বুঝলাম
কথার টেম্পার একটু কমিয়ে নিল।
তারপর
যা বলল,তাতে আমার মাথায় কেউ যেন থান ইট মারল একদম কষে!
সেই আমার দোকানে গিয়ে যা বলে এসেছিল বুড়ি
এখন
সেই কথার বাকীটা যেন বলতে বসল সে…..
বলল
….জানো হোসেন, হাতেমের বাপের সঙ্গে বিয়ে ত আমার হোল
আমি কিন্তু কলেমা যে নিলাম না,তা,যেন সবাই ভুল মেরে বসল।
ভাবলো
আমিও মোছোনমান হলাম
মোছোমানের বউ হলাম
পরে হলাম মোছোনমানের মা
তারপর
ত তিন তিনটে পরের মেয়ের শ্বাওড়িও হলাম কালে কালে।
আসলে
আমার কিন্তু কোন গতি হল না।
আমি মন্ত্রও পালাম না,আবার আমার কলেমাও হাত ছাড়া হোল বদবায়ূর প্রকোপে…..
আরও একবার
আমি চমকে গেলাম।
প্রকোপ শব্দটা এমন অজ- মানুষের
মুখে শুনব
এ যেন আমার ভাবনারও অতীত।
অবশ্য আসবার কালে পথের দখিনে একটা বুনিয়াদী স্কুল দেখে আসলাম বটে….
ভাবলাম
এটা তার বদ প্রভাবও হতে পারে!
যাহোক বুড়ি এবার কোলে কোঁখে নিজেকে আরো গুটিয়ে এনে ভ্যান্না ভাজতে শুরু করল আবার
বলল
হোসেন,তুমি ত ডাক্তার,আমি তোমারে বলে গেলাম
আমি
তেখনো এবং এখনো এক ব-কলেমার
ঝুটোমানুষ!
গোস্ত খাইনি.. আজান পড়লি ঘোমটা দিইনি
কোনদিন!
এদিকে
মরণ ত ঘনিয়ে এল,খাঁচার আড়া আর একটাও ভাল নেই আমার!
এখন যেই মরব
মুল্লারা অমনি আমার কবর দেবে!
বলো
কবরে যদি আমি যাই
তাহলে যমের বিচার আমি কিভাবে পাব,বলো!
আর
আমার গতিই বা কি করে হবে!
জানো
ডাকতার বাপকেলে একটা নাম পেয়েলাম
এখন
আমার যদি তারা গোরে পাঠায়
তাহলি
ঐ নামের কি অখ্যাতি হবে না বলো??!
এই মহা ফ্যাচালে পড়ে আমিও কেমন হাবা গোবা মেরে গেলাম।
আমাবশ্যা দেখেছি গভীর রাতে
পূর্ণিমা দেখেছি নেউলেবিলের কান্দায়
থকথকে কাদায় কতোবার পা ডেবে গেছে আমার
তাও
পাগলা শিয়ালের তাড়া খেয়ে!
তবু কখনো এমন ঘামতে দেখিনি নিজের শরীর।
হাতেমের মা যা বলছে
তাতে যা দিনকাল পড়েছে
তাতে মাথায় বাজ পড়ে যার মরণ হয়েছে
সেও
অনেক সোয়াস্তি,, অন্তত হাতেমের মায়ের চেয়ে
বেশী পাবে!
বললাম
তা এসবে আমার ডাকা কেন??
আমি একে তো হাতুড়ে
দুয়ে
মোল্লাদের খেদান খাওয়া মানুষ!
আমারে
তোমার দরকার কিসে,বলো?
হাতেমের মা
এবার জ্যান্ত হয়ে উঠল যেন তেড়ে ফুড়ে!
সব কঁকানি
সব নাকে কান্না তার থেমে গেল!
সোজাসুজি
আমার হাতটা সে চেপে ধরে বলল
…..আমি শ্মশান চাইনে হোসেন,ভয় করে!
আমি কবরও চাইনে হোসন ভয় করে….!
শুনে
মেজাজ পুরো খচে গেল আমার
শুধোলাম
……তাহলি আমার কি করণীয়,সেডা ত বলবা???
….. আমারে মর্গে দে বাপ,বল,দিবি?
মহা জ্বালায় পড়া গেল
বললাম
….তা নিজেই তুমি
হাসপাতালে গিয়ে মরো,মর্গ ত পাবা!
…. আমি ভিখিরি বাপ
আমার মরণ কি হাসপাতালে হয় বলো?
যদি
মরিও
মোল্লারা ঠিক খবর পাবে,আর,আমারে গোর দিয়ে থোবে
অই মোছোনমানদের কবরখোলায়!
আমি আর বসতে পারলাম না,ঝাড়া মেরে উঠে দাঁড়ালাম!
যাবার সময় বাতাসা নকুলদানা নিয়ে গিয়েছিলাম হাতেমের মা এসব খেতে পছন্দ করে বলে
নিয়ে
গিয়েছিলাম একদলা তেঁতুলও।
কথার কানায় পড়ে দেব যে সে ফুসরোত পাইনি।
এখন
সেগুলো তার কোচড়ে থপ করে ফেলে
বললাম
মর্গ, যারা বেওয়ারিশ,তাদের জোটে!
তুমি
হাতেমের মা,ওয়ারিশনে ভরা,আমারে ক্ষমা কোর!
…..চলে যাচ্ছ? বুড়ি ঘোলা চোখে তাকাল
আমার মুখপানে।
বললাম
….. হু!
মরে গেলি আসবা ত?
…কেন?
……মর্গে নিতি?
….আরেহ জ্বালা,মর্গ কি ফেলনা?
……আমি ত ফেলনাই বাপ,নাহলি
নটবর মালোর পুঁতি হয়ে আমার কিনা একটা জনম কাটে মোচোনমানের ঘরে!!
আর তারপরই
ভালমন্দ কিছু নয় একদম ডাইরেক্ট অ্যাকশন করল!
বলল,আমি যদি বিষ খাই
মরি
তাহলি ত কাটাছেঁড়া হব,তাহলিও কি মর্গ পাব না হোসেন?
মর্গে গেলি, তুমি ডোমপোঁতা হবার ব্যবস্থা করবা
কথা দেও…..!
আরেকটু
দাঁড়ালে আমি দুম করে পড়েই যেতাম মাটিতে!
তাই
পড়পড় করে হাঁটা দিলাম আগান বাগান মানা মানি না করেই!
পথে উঠব
এক বয়স্ক পরহেজগার লোক
শুধাল
….হাতেমের মা মরবে বলে সাধু হাওলাদারকে ধরেছে শুনেলাম!
তা আপনি আবার কিডা?
গোপালনগরের নুকমান নাকি?
তা কি বেবস্থা করে গেলে নুকমান??
বুঝলাম,
পরহেজগারবাবু কানা মন্দ নয়।
আমারে সে নুকমান ভেবেই তলপেটের কথাটা
নৈলে
এমনভাবে শোধাতে পারত না কখনো!
গাড়ীর বেগ বাড়িয়ে দিলাম।
আর
গলা পুরো লম্বা করে যেন হাতেমের মায়েরও শুনিয়ে বললাম
আমি হোসেন গো
পুরোই কানাহোসেন…!