রবি আড্ডায় উত্তম দত্ত

এক জাদুকরের সঙ্গে রোজ দেখা হতো আমার মাথার মুকুটে জাদুদণ্ড

 ঠেকিয়ে সে বলত : ঔং গিলিগিলি ফু… দ্যাখো পৃথিবীটা কত সুন্দর।

দেখতে দেখতে বৃষ্টিহীন মাঠে নেমে আসত অলৌকিক জলধারা

আমন ধানে ভরে উঠত আমাদের শূন্য উঠোন পাতি হাঁসের ডিমে আলো হয়ে যেত সমস্ত খামার

মাসের শেষে দু মুঠো চালের জন্য বাবা ও মায়ের চেঁচামেচি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেত পাড়ায় পাড়ায় শুরু হতো ‘নিমাই সন্ন্যাস’ পালা

জলে স্থলে ও আকাশে উড়ে বেড়াত নীলকণ্ঠ পাখির ঝাঁক।

আর প্রতিটি মানুষের মুখ দেখে মনে হতো : তথাগত হাসছেন।

সেই জাদুকর এখন আর আসে না। কোথায় হারিয়ে গেছে। তার জাদুদণ্ডটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত কারখানার দরজায়। শ্রমিক-বস্তিতে মড়ক লেগেছে। মানুষ মানুষকে ভালোবাসতে পারবে কিনা তার বিচার হচ্ছে খাপ পঞ্চায়েতে।

এখন আমাদের দাম্পত্যের আয়ু বড়োজোর তিন বছর। বস্তির খালের পাশে কিংবা কিনারে প্রতিদিন পড়ে থাকে লাশ। মাঘ মাসের শীতে যার চাদর জোটেনি, দু-তিনটে পার্টির পতাকা এসে ঢেকে দেয় তার মৃতদেহ।

তবু এক মুঠো ভালোবাসার জন্য মানুষ ছুটে যাচ্ছে মরুভূমির দিকে। প্রতিদিন রাশি

রাশি বিষাদ আর মাথার অসুখ ঘিরে ফেলছে আমাদের। প্রতিটি মানুষের মুখ দেখে।

মনে হয় : উম্মত্ত দাবানল ছুটে আসে দূর থেকে।

এখনও ঘুমের মধ্যে চিঠি লিখি সেই হারিয়ে যাওয়া জাদুকরকে : ফিরে এসো আমাদের পুড়ে যাওয়া ঘরে ও খামারে। সমস্ত আকাশ জুড়ে উড়ে যাক সাই সাই নীলকণ্ঠ পাখিদের ডানা।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *