রবি আড্ডায় উপল মুখোপাধ্যায়

অনুবাদের আসরে একটা থেকে অন্য একটা সংস্কৃতির স্তরে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছিল। এতে যে যে বিপর্যয় হয় তাতে অনেক কিছু অদল হয় বদল হয়। আর হয় নানা কিছু আরো নানা কিছু। সেটা হতেই থাকে তবে পড়া হয়। এমন পড়া ও শোনা চলছিল। অনুবাদের আসরে শুধু অনুবাদের কথাই বা কেন শোনা যাবে আরো অনেক কিছু পড়া ও শোনাও তো যেতে পারে। সে সব আটকানোর জন্য যথারীতি দরজা বন্ধ ছিল, পুরু কাচের দরজা। কিন্তু একটা পোকা ঢুকে পড়ে। অনেক চেষ্টার পর একজন, তিনি মহিলা ও পুরুষ যে কেউ হতে পারেন পোকাটাকে ধরে ফেললেন। তারপর হাত মুঠো করলেন যাতে পোকাটার কথা পড়া ও শোনা না যায়। তারপর তিনি উঠে পড়লেন। তখন অনুবাদের আবশ্যিক বিপর্যয় নিয়ে পড়া ও শোনা তুঙ্গে আর ওই মহিলা বা পুরুষ উঠে পড়লেন। কাচের দরজা খুললেন তিনি ফলে একগাদা শব্দ এসে পড়ল। অনুবাদের আলোচনার সঙ্গে সেই সব শব্দরাও সারা ঘরটায় ঘুরতে লাগল। কয়েকটা জিনিস পড়ে গেল অকারণে, সে সব অনুবাদ বহির্ভূত শব্দদের সবাই পড়তে ও শুনতে লাগে। তখন একজন প্রশ্ন করলেন,“ অনুবাদের অন্য সংস্কৃতিতে চালানের জন্য এই বিপর্যয় কি আবশ্যিক ?” যাকে প্রশ্ন করা হল, তিনি পুরুষ বা মহিলা যে কেউ হতে পারেন, বললেন,“ নিশ্চয়ই। ” ওনার কথা ছাপিয়ে একটা পাম্প চলতে শুরু করল ফলে আর কেউ কারু কথা স্পষ্ট ভাবে শুনতে পারল না। বিপর্যয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল এটা বোঝা গেল। তারপর হল চা পানের বিরতি।
বিরতির পর আবারো আলোচনা চলতে থাকে। কথা হয় কবিতার অনুবাদ নিয়ে, বার্তারাও আসপাশে ঘোরে। এসময় দেখা গেল দুটো ফ্যানের একটা ঘুরছে। কবিতার পর অনুবাদযোগ্য গল্প পড়ার আগে দেখা গেল বেশ শীত করছে। ফ্যানটা বন্ধ করার চেষ্টা চলল। সেটা করতে গিয়ে বারবারই আলো নিভে যায় আর অন্ধকার হয়ে যায় কোন কোন জায়গা। যেখানে অন্ধকার হয় সেখানের লোকেরা , মহিলাও হতে পারেন বা পুরুষ সবাই আলোর জায়গাটার দিকে তাকিয়ে থাকেন। পাখা বন্ধ হচ্ছে না দেখে অনেকে মিলে চেষ্টা করলেন ফলে অন্য পাখাটাও চলতে আরম্ভ করে আর তাড়াতাড়ি তা বন্ধ করা হয়। কিছুতেই পাখাটা নেভেনি ফলে ঠাণ্ডা আরো বেড়েছিল। অনুবাদযোগ্য গল্প শুরু হতে সেই ঠাণ্ডা আরো বাড়তেই থাকে। প্রতিটা অক্ষর উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে এভাবে ঠাণ্ডা বাড়ায় সকলেই শীতার্ত হয়ে পড়লেন। তবু গল্প পড়া ও শোনা চলতেই থাকে। ঘরের ভেতর বরফের স্তর জমে যায় ছাদের ওপর থেকে তুষারকণা গুঁড়িগুঁড়ি গায়ে পড়ে শীতের বোধ লোপ পায়। সবাই সেই পাখার আওয়াজের মধ্যে এক গ্রামের গল্প শোনে। সেই গ্রামে তখন ভীষণ ঠাণ্ডা আর বিস্তীর্ণ মাঠ দেখা যায়। সেই মাঠের মধ্যে দিয়ে একটা পুলিশ ভ্যান আস্তে আস্তে এগোতে থাকে বরফের স্তর পেরিয়ে। পাখার শব্দ ও ঠাণ্ডার মধ্যে এভাবে পড়া ও শোনার পর বোঝা যায়- সব এক শীতেরই কথা বা কথা বা কথা যা অবশ্যই অনুবাদযোগ্য আর তাতে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। এক অবধারিত বিপর্যয় যাকে অনুবাদই বলে।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *