রবি আড্ডায় কস্তুরী বসু

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য গাতিয়ে মুখস্থ করে নম্বর পেয়ে অনেককে ল্যাং মেরে এগিয়ে যাচ্ছে একটা বড় পে প্যাকেটের দিকে। প্রফেশনাল কোর্স। এই শিক্ষার ফলাফল?

মোবাইল চোর সন্দেহে একটি ২৮ বছরের দরিদ্র মানুষকে হোস্টেলের ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে পিটিয়ে মেরে ফেলা। তারপর হোস্টেলের ব্রো কোড। কেউ কিছু দেখেনি। কেউ কিছু জানেনা। অনুশোচনা নেই। ভেঙে পড়া নেই। অনুতাপ নেই। কচি কচি মেধাবী অপরাধী সব। সবাই সবার পেছনে আছে, সবাই পে প্যাকেটের পেছনে আছে। ওরা মানুষের প্রাণ বাঁচানোর শিক্ষা পাচ্ছে। নিজের পাপ বাঁচালো।

এখনো মনে আছে পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের skull এর এক্স রে ভাইরাল হল। কোরপান শার rib cage এর বোধহয় এক্স রে হয়নি। চোখা চোখা গালাগাল ধেয়ে এল রুগীর আত্মীয়দের ক্লাস আর ধর্মকে টার্গেট করে। কচি, মিষ্টি দেখতে এক নীল জামা পরা ছেলে সেবার ডাক্তার আন্দোলনের নেতা ছিল। সে হিরো হল। সে বহুদিন হল খোলাখুলি ইসলামবিদ্বেষী কথা বলে।

একের পর এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে দশকের পর দশক নিরবচ্ছিন্ন ragging। ছোটবেলায় সন্দীপ সিংহ রায়ের নাম শুনেছিলাম। এক দাদাকে প্রাণভয়ে পালাতে হয়েছিল IIM ধানবাদ থেকে। একের পর এক দরিদ্র ছাত্রের, সংবেদনশীল ছাত্রের ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ছেড়ে পলায়ন। হয় পালাও নয় বশ্যতা মেনে নাও নয় সারা জীবনের জন্য ট্রমায় ভোগো। যখনই কারুর মৃত্যুর খবর আসে, তখন চাপা দিয়ে দাও। সবাই মিলে বাকিদের বাঁচাও। ব্রো কোড। কচি কচি অপরাধীদের ব্রাদারহুড। আয় অপরাধীরা মিলে বেঁধে বেঁধে থাকি।

আর অন্যদিকে এই একই প্রফেশনাল কোর্স এ গাতানোর প্রতিযোগিতার হাত ধরে গড়ে উঠবে হাজার হাজার কোটির কোটা ফ্যাক্টরি, আকাশ, বাইজু। ঘুপচি ঘরে সেই ফ্যাক্টরির চাপ নিতে না পারা অগণিত আত্মহত্যা, অবসাদ, সরে যাওয়া, মৃত্যু। বাইরে আর্ট অফ লিভিং আরো কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে সুইসাইড প্রিভেনশন নিয়ে।

আসলে কোমল অনুভূতি যাদের আছে আর যারা নরম, অন্যরকম, সবার মত হতে পারে না বা হতে চায় না, তারা মরে যায়, সরে যায়। তাদের এই ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে ফেলার ফিল্টার লাগানো আছে রাশি রাশি।

এ কেমন সিঁড়ি? কেমন উৎকর্ষের উদযাপন? এর প্রয়োজন কী আছে?

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *