রবি আড্ডায় উত্তম দত্ত 

মানুষের অপমান করার আনন্দই আলাদা। কাউকে সম্মান প্রদর্শন করতে শিক্ষার প্রয়োজন হয়। আর অসম্মান করতে চাই অশিক্ষা। যে শিক্ষার কথা বলা হল, তা ততটা অ্যাকাডেমিক নয়, যতটা পারিবারিক, সামাজিক ও মানবিক। আর যে অশিক্ষার কথা বলা হল, তাও আসে পরিবার ও পরিবেশ থেকে, ভুল শিক্ষা থেকে এবং সুশিক্ষার অনটন থেকে। 

অর্থনৈতিক দিক থেকে নয়, মানবিক দিক থেকে যারা নিতান্ত দরিদ্র, হাভাতে এবং হাঘরে, তারাই তুচ্ছ বা সামান্য কারণে অন্যকে অপমান করে নারকীয় আনন্দ উপভোগ করে। তীব্র ঈর্ষা, অসূয়া, বিদ্বেষ, নিষ্ঠুরতা, প্রতিশোধস্পৃহা আর নিরুদ্ধার হীনমন্যতা থেকেই আমাদের অন্তরে অন্যকে অপমান করার সর্পিল বাসনা জেগে ওঠে।

 অনেকসময় অপমানের বদলা নিতেও আমরা পালটা অপমান করি। চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, জিভের বদলে জিভ উপড়ে নিতে চাই। এই বদলা নেওয়ার খেলা নিরন্তর চলতেই থাকবে, যতদিন না পৃথিবীর সমস্ত মানুষ অন্ধ আর  বোবা-কালা হয়ে যাচ্ছে। 

মানুষকে একান্তে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপমান করার চাইতে সর্বসমক্ষে অপমান করার আনন্দ অনেক বেশি। এই অপমান অনেকটা উৎসবের মতো। 

মানুষের প্রতি মানুষের অপমান হতে পারে শারীরিক, মানসিক, বাচিক ও লিপিনির্ভর। কেউ কেউ অন্যকে অপমান করতে এতই দক্ষ যে, বন্ধুমহলে তার বিশেষ প্রতিপত্তি আছে। কারও কারও জিভে এত ধার, গলায় এত বিষ যে, প্রতিদিন সন্ধেবেলা চ্যানেলে চ্যানেলে এদের ডাক পড়ে। 

সামাজিকভাবে বিখ্যাত বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অপমান করার আনন্দ অর্গাজমের চাইতে বেশি। ফেসবুকে, সংবাদপত্রে, নেতা ও মন্ত্রীদের রাজনৈতিক ভাষণে বা প্রতিআক্রমণে এই অর্গাজমের নিত্য দৃষ্টান্ত দেখতে পাই। এবং সবচেয়ে আশ্চর্য, অপমানিতের চাইতে অপমানকারীর সমর্থক-সংখ্যা চিরকালই বেশি। এরা সবাই সাক্ষর এবং অল্প বিস্তর স্কুল কলেজের সিলেবাস মুখস্থ করে দু একটা পাশটাশও করেছে। তবু ভুল বানানে, ভুল বাক্যে এবং ছদ্মনামে এরা অপছন্দের মানুষকে এত অনর্গল গালাগালি ও অপমান করে চলে যে, এদের প্রত্যেককে উত্তরীয়সহ ‘খিস্তিশ্রী’ উপাধি দেওয়া উচিত। 

এক প্রখ্যাত কবি আমাকে বলেছিলেন, ফেসবুকে আমাকে যত গালাগাল দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে একটা তিন ভলিউমের ‘নিন্দা সমগ্র’ বা ‘খিস্তি সমগ্র’ প্রকাশ করা যেত। ভালো বিক্রি হতো।

আমরা যারা অন্যকে গালাগাল দিয়ে অপমান করে পৈশাচিক আনন্দ পাই, তারা নিজেরা কখনও গালাগালি শুনতে চাই না। আবার কিছু মানুষ এসব শুনতে এবং বলতে রীতিমতো অভ্যস্ত। কিছুই তাদের বিচলিত করে না। কিন্তু এরকম মানুষও আছেন, কেউ নিছক ‘শালা’ বললেও তাদের অপমানবোধে সারারাত ঘুম হয় না। 

কর্মক্ষেত্রে অপমানিত হয়ে বহু মানুষ চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, জীবিকার অনিশ্চয়তা আছে জেনেও। আবার অনেকেই মাসান্তে কয়েক হাজার টাকা বেতনের নিশ্চয়তার জন্য কুৎসিত অপমান সহ্য করেও মাথা নীচু করে রোজ কর্মক্ষেত্রে যায়। বসের বা সহকর্মীদের অপমান হজম করে বিষণ্ণ মনে বাড়ি ফিরে আসে। 

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘ঘুণপোকা’ উপন্যাসের পাঠক মাত্রই জানেন , নায়ক শ্যাম একটা দামি চাকরি ছেড়ে দিয়েছিল , শুধুমাত্র ‘বস’ তাকে ‘বাস্টার্ড’ বলেছিল বলে । শীর্ষেন্দু লিখেছেন : “ তার ড্রয়িংয়ে একটা ভুল থাকায় উপরওয়ালা হরি মজুমদার জনান্তিকে বলেছিলেন : ‘বাস্টার্ড’। 

মজুমদার শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে গালাগাল দেয়। ….. শ্যাম নিজেও তো কতবার কতজনকে ওরকম গাল দিয়েছে ; যা নিজেই সে লোককে দিয়েছে তা ফিরে পেতে আপত্তি হবে কেন? ….. কিন্তু ক্রমে বুঝতে পারল একটি গালাগাল থেকে একটি ভূত বেরিয়ে এসে তার মাথাময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। …. এক ভয়ংকর গ্রীষ্মের মাঝরাতে উঠে টেবিল-ল্যাম্প জ্বেলে সে তার ইস্তফা পত্রটি লিখে ফেলল। আর একটা চিঠি লিখল মাকে….. ‘আমার চাকরি গিয়াছে। আমার উপর আর খুব ভরসা করিও না।’

আমরা নিজেদের ডিগ্রি নিয়ে যতই গর্ব করি না কেন, প্রতি পাঁচ বছর পর পর কিছু অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত মানুষকে ভোট দিয়ে দেশের নেতা ও মন্ত্রী বানাই। যাদের চামড়া কাজিরাঙার গণ্ডারের মতো পুরু। তারাই ইচ্ছে মতো আমাদের চালায়। তারাই আইন। তারাই সংবিধান। টি ভি ও সংবাদপত্র খুললেই দেখা যায় তাদের আগ্রাসী ভাষণ, উত্তেজনাপূর্ণ অশালীন উক্তি, বিরক্তিকর ভাষা-দূষণ, ব্যক্তিগত আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণ। আমাদের শিশুরা এসব দেখতে দেখতেই বড় হয়। তারাও ধরে নেয়, রাজনীতি মানেই প্রতিপক্ষকে তীব্র ব্যঙ্গ, কদর্য আক্রমণ, ব্যক্তিগত নোংরা অপমান।  আমরা মিহি চামড়ার মানুষ। আমরা রাজনীতি করি না। তবে রাজনীতি বুঝি। এবং চারপাশের আগুন বিষ ও নৈরাজ্য দেখে মনে মনে গুমরে মরি। চাকরি ও নিরাপত্তা হারানোর ভয়ে এবং সম্মান হারানোর আশঙ্কায় চুপ করে থাকি। 

এবং নিঃশব্দে লক্ষ করি, কীভাবে সামাজিক ডিকশনারিতে ঢুকে পড়ছে এক এক যুগের এক একটি নতুন গালাগাল, নতুন অপমানের ভাষা : কখনও বুদ্ধজীবী, কখনও চটিচাটা, কখনও সেকু, মাকু…

এ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এত পরিশ্রম করেও তিনি ক্লান্ত হন না কেন? রহস্যটা কী? উত্তরে তিনি বলেছিলেন : 

‘আমি ক্লান্ত হই না, কারণ আমি প্রতিদিন দুই-তিন কেজি গালি খাই…ভগবান আমাকে এমনভাবে আশীর্বাদ করেছেন যে এটা আমার ভিতরে পুষ্টিতে রূপান্তরিত হয়।’ এসব কদর্য গালাগালিকে ইতিবাচকভাবে নেওয়ার জন্যই এমনটা হয় বলে তিনি জানান।

রসিকতার ছলে বললেও কথাগুলো ভাববার। প্রতিটি রাজনৈতিক নেতার সম্ভবত এই গালাগালিকে পুষ্টিগুণে রূপান্তরিত করার অতিলৌকিক ক্ষমতা আছে। রাজনীতি শব্দটাই এখন অশ্লীল। অথচ ওই অশ্লীলতাই আমাদের অনতিক্রম্য নিয়তি। এর ভিতরেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।

জীবনানন্দ লিখেছিলেন : ‘অপরের মুখ ম্লান ক’রে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই।’

যারা অন্যকে অপমান করে রীতিমতো গর্ববোধ করে তাদের প্রত্যেকেরই মনস্তত্ত্ব ধরা আছে এই কবিতায়। 

কিছু কিছু অপমান এতই সর্বনাশা যে, ক্ষত শুকিয়ে গেলেও তার দাগ আজীবন থেকে যায়। সেই ক্ষতে আর রোমের উদগম ঘটে না। রোমকূপকেও সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে যায় সেই প্রাণঘাতী অপমান। মনে পড়ে যায় বিনয় মজুমদারের সেই আশ্চর্য পঙক্তি :

‘জীবনের কথা ভাবি, ক্ষত সেরে গেলে পরে ত্বকে

পুনরায় কেশোদ্গম হবে না’।

পৃথিবীতে এত অপমান এত অসম্মান আছে বলে কি মানুষ বেঁচে থাকবে না? অপমানিত মানুষ কি প্রতিদিন ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করবে? শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন :

‘গান মুহূর্তে ধুলোয় লুটিয়ে পড়ে

চারদিকে এত জম্পেশ খেলাধুলো—

এরই মাঝখানে বয়ে যেতে হবে বলে

কানে তুলো আর পিঠেও বেঁধেছি কুলো।’

অপমানকারী ও অপমানিতের মনস্তত্ত্বকে বড় সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন তিনি :

‘তুমি ভেবেছিলে অপমান ছুড়ে যাবে

দু’কথা শুনিয়ে সুখ পাবে ভেবেছিলে

চোখের আড়ালে অশ্বত্থের ডালে

ভেবেছ দু’ পাখি মরে যাবে এক ঢিলে।

মরেওছে বটে। তবে সে আমার নয়।

আমার পাখি তো লুকোন নৌকোজলে।

অবশ্য জানি, যা-কিছু লুকোন আজ

সবই পেতে চাও ছলেবলেকৌশলে।’

এই অপমান আর অসম্মানে ভরা কর্কটময় বসুন্ধরায় সংবেদনশীল নিরীহ মানুষেরা বড় সতর্কভাবে পথ চলে। কারণ সামান্য অপমানও তাদের কাছে বিষাক্ত মৃত্যুবাণতুল্য, নারকীয় মলস্রোতে অবগাহনসম। তিলমাত্র বিচ্যুতি ঘটলে হা হা করে তেড়ে আসবে সহস্র পিশাচ। কবিতার অশ্রুর মধ্যে লবণের পরিবর্তে এক ফোঁটা মিষ্টি খুঁজে পেলেও রসিক শেয়ালেরা বিষণ্ণ মানুষের চোখের জল নিয়েও গণ-বিনোদন তৈরি করবে। সুতরাং : 

‘খুবই দেখেশুনে বৈঠা বাইতে হবে

ওত পেতে আছে ঘাটে ঘাটে ঘড়িয়াল —

কবিতায় যদি গল্প লুকোন থাকে

টপ করে তাকে গিলে নেবে সিরিয়াল !’

জন কিটস নামের একটি বাচ্চা ছেলে একদা নিরুপম স্বপ্ন আর গভীর ভালোবাসা নিয়ে লিখেছিল  Endymion নামের একটি কাব্য। লিখেছিল : ‘A thing of beauty is a joy for ever.’ সে কবিতা ছিল দেবী সিন্থিয়া আর মেষপালক এন্ডিমিয়নের রূপমুগ্ধতার কল্প-কাহিনি। সে বই পড়ে এবং না বুঝে ব্ল্যাকউডস ম্যাগাজিনের পাতায় কবিকে জঘন্যভাবে আক্রমণ ও অপমান করা হয়। কবি হয়ে ওঠার আগে কিটস জীবিকার দায়ে কিছুদিন শল্যচিকিৎসা শাস্ত্রে দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন। সমালোচকেরা লিখল : কবিগিরি ছেড়ে মি: জন যদি প্লাস্টার, পিল, ব্যান্ডেজ আর মলমের বাকসের কাছে ফিরে যান, তাহলেই মঙ্গল। একজন উপবাসী কবির চাইতে একজন ক্ষুধার্ত চিকিৎসক সমাজের পক্ষে ভালো। 

‘কোয়ার্টারলি রিভিউ’ আরও এক ধাপ এগিয়ে চিমটি কেটে বলল, মি. জন একজন ভালো নকলনবিশ। লোকটা লি হান্টের কবিতা হুবহু নকল করেছে। 

প্রথম স্বপ্নের বই এভাবে ধিকৃত হল। প্রেমিকাও চলে গেল দূরে। যক্ষ্মায় খেয়ে ফেলল তার ফুসফুস। ২৬ পূর্ণ হবার আগেই মারা গেল কিটস। শেলির ধারণা হয়েছিল, যক্ষ্মায় নয়, সমালোচকদের দেওয়া কুৎসিত অপমান সহ্য করতে না পেরে কিটস মারা গেছেন। লেখা হল কিটসের স্মৃতিতে শেলির সেই অমর কাব্য ‘অ্যাডোনাইস’। 

রবীন্দ্রনাথ একটি প্রবন্ধে এইসব মস্তান ও লুম্পেন সমালোচকদের বলেছিলেন : ‘দেউড়ির দারোয়ান’।

আমাদের দেশেও ‘শনিবারের চিঠি’র মতো পত্রিকাকে ঘিরে একত্র হয়েছিল কিছু দেউড়ির দারোয়ান। তাদের অনেকেরই প্রতিভা ছিল। কিন্তু মস্তানি, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ আর দারোয়ানগিরি করতে গিয়ে তারা সেই প্রতিভার যথেষ্ট অপচয় করেছিল। এরাই রবীন্দ্রনাথকে বলেছিল :

‘উড়িসনে আর পায়রা-কবি / খাঁচার ভিতর থাক ঢাকা / তোর বকবকানি ফোঁসফোঁসানি / তাও কবিত্বের ভাব মাখা / তাও ছাপালি পদ্য হল / নগদ মূল্য একটাকা।’

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মতো রবীন্দ্রনাথের একদা বন্ধু এবং পরে দুর্ভাগ্যক্রমে শত্রু রবীন্দ্রনাথের প্রেম পর্যায়ের গানগুলিকে বলেছিলেন ‘লম্পট’ ও ‘অভিসারিকার গান’। ‘চণ্ডালিকা’কে আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কবিকে অপমান করে লিখেছিলেন ‘আনন্দবিদায়’ নাটক। যে নাটক অভিনয়ের সময় ক্ষিপ্ত দর্শকদের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল মঞ্চের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার প্যারডিতে এরা লিখেছিল :

‘আমি ব্যাঙ

লম্বা আমার ঠ্যাং

ভৈরব রভসে বরষা আসিলে/ডাকি যে গ্যাঙোর গ্যাঙ।

আমি ব্যাঙ/আমি সাপ, আমি ব্যাঙেরে গিলিয়ে খাই,

আমি বুক দিয়া হাঁটি ইঁদুর ছুঁচোর গর্তে ঢুকি’য়ে যাই।

আমি ভীমভুজঙ্গ ফণিনী দলিত ফণা,

আমি ছোবল মারিলে নরের আয়ু মিনিটে যায় গণা।

আমি নাগশিশু, আমি ফণীমনসার জঙ্গলে বাসা বাঁধি,

আমি ‘বে অব বিস্কে’ সাইক্লোন, আমি মরু সাহারার আঁধি’।’

এরা জীবনানন্দকে বলেছিল ‘গণ্ডার কবি’, নির্বোধ কবি ‘জিহ্বানন্দ’। বলেছিল ‘বোধ’ কবিতার নাম ‘গোদ’ হইলেই ভালো হইত। তাঁর বিখ্যাত ও সুপরিচিত কবিতার লাইন তুলে দিয়ে সজনীকান্ত দাসেরা বলেছিল :

‘ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে

অবহেলা করে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে

ঘৃণা করে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে।’

‘কবি সব করিয়াই দেখিয়াছেন। শুধু বিবাহ করিয়া মেয়েমানুষেরে দেখেন নাই। দেখিলে ভালো হইত, গরিব পাঠকেরা বাঁচিত।’

কিন্তু ট্রাজিক সত্যিটা হল, মহাকালের দেবতা এইসব বিকৃত মনের বিছুটিবাগানের মালিক অপমানকারী সমালোচকদের মনে রাখে না। মানুষের ঘৃণা আর উপেক্ষার অন্ধকারে তারা তুচ্ছ ও শুষ্ক কীটের মতোই ফসিল হয়ে পড়ে থাকে।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *