আফতাব হোসেন
কিছু প্রশ্নের মনে হয় উত্তর হয়না…
পাড়ার দুটো ঘর এর পরের ঘর হারান দার । কোলকাতায় রেডিমেট কিম্বা খুচরো মালপত্র আনার ব্যবসা করেন , মানে দোকানিরা ফর্দ ধরে দেন আর উনি কলকাতার বড়বাজার এর আনাচে কানাচে ঘুরে সব লিস্ট মিলিয়ে কিনে দোকানদারদের হাতে পৌঁছে দেন । সিম্পল কাজ । মুনাফা বেশি ।
এবার একটু গ্রীষ্মকালের মাঝামাঝি সময়টায় আসুন , মানে ঠিক যে সময়টায় মধ্যপঞ্চাশের হারান দার সুগার আর প্রেসারের মাপটা একটু একটু করে বাড়ে সেই সময় প্রায় 45 ডিগ্রি গরমে ট্রেনে গাদাগাদি করে হাওড়ায় নেমে , প্রায় একছুটে MG মার্গ পেরিয়ে বড়বাজার এর ওই বীভৎস প্যাচপ্যাচে গরমে মাল কিনে মুটে কে সব বুঝিয়ে বাড়ি ব্যাক করার সময় ট্রেনে ওঠার আগে পর্যন্ত্য অনেক বার বুকের বাম পাশে চিনচিন করলেও হারান দা রা কোনদিনও একগ্লাস লস্যিও বাইরে কিনে খাননা । অবশ্য একবালতি ঘামের ঘাটতি একগ্লাস লস্যির পূরণ করার কথাও নয় ।
মনে হতে পারে লোকগুলো কিপ্টে ।
মনে হতেই পারে বেশি লাভের আশায় সালারা কলকাতায় ছুটে ।
কিন্তু আপনি মনে হয় জানেন না গত তিনমাসে টাটা টি গোল্ড এর দাম 23 টাকা বেড়েছে আর সরষের তেলের দাম 27 টাকা ।
তাও কোন দিনও হারান দা দের লোকাল ভুষিমাল দোকানে বার্গেনিং করতে দেখিনি । আসলে এই লোকগুলোর কাছে অভাব হাজারটা থাকলেও ঠিক যেটার কোনদিনও অভাব ছিল না সেটা হল “আত্মসম্মান ” ।
করে খাবো ,
‘দরকারে না খেয়ে থাকবো,.
তাও হাত পাতবো না মানসিকতা ‘ ।
কাল যখন একটা ক্লাব এসেছিল হারান দার ছয় বছরের ছেলে আর বউকে পুজোর পোশাক দান করতে । একগাদা ফ্ল্যাশ লাইটে হারান দার চোখে জল দেখলাম ।
ছেলে পুলেরা বলল হারান দার ” খুশির আঁসু ” বেরোচ্ছে …
আমার শুধু কেন জানি না মনে হল পঁয়তাল্লিশ এর গরমের দু বালতি ঘামে ভেজা ” আত্মসন্মানটা ” কোথায় যেন ভেঙে যাওয়া জল বেরোলো হারান দার চোখে ।
কি জানি সব প্রশ্নের কি উত্তর হয় ..
যারা দিচ্ছেন তাদের ছবি ভাইরাল করুন ,
যাদের দিচ্ছেন তাদের না .
শুভ শারদীয়া