ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অনন্য নাম জুবিন গর্গ। গায়ক, সুরকার, অভিনেতা ও সব্যক্তিত্ব ও উত্তরাধিকারঙ্গীত পরিচালক হিসেবে তিনি শুধু অসমেই নয়, সারা ভারতজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর কণ্ঠের স্বকীয়তা, সুরের বৈচিত্র্য এবং নিখুঁত পরিবেশনার জন্য জুবিন গর্গকে অসমের “রকস্টার” বলা হয়।


প্রারম্ভিক জীবন

জুবিন গর্গের জন্ম ১৮ নভেম্বর ১৯৭২ সালে অসমের তেজপুর শহরে। তাঁর বাবা নবরূপ জ্যোতি গর্গ ছিলেন একজন সঙ্গীতশিল্পী এবং মা ইতা গর্গও সঙ্গীতে পারদর্শী। পারিবারিক সঙ্গীতচর্চার পরিবেশেই জুবিন ছোটবেলা থেকে গান শেখা শুরু করেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি তিনি গিটার, বাঁশি, ড্রামসহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারদর্শিতা অর্জন করেন।


সঙ্গীত জীবন ও বলিউডে সাফল্য

জুবিন গর্গ প্রথমে অসমীয়া গানে জনপ্রিয়তা পেলেও পরবর্তীতে বলিউডের প্লেব্যাক সঙ্গীতে নিজের অবস্থান পাকা করেন। তাঁর গাওয়া “ইয়া আলি” (Gangster, 2006) গানটি রাতারাতি তাঁকে সারা ভারতে পরিচিত করে তোলে। এছাড়াও Fiza, Kaante, Andaaz, Dil Tu Hi Bataa সহ একাধিক ছবিতে তাঁর কণ্ঠ দর্শকদের মন জয় করেছে।

অসমীয়, বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু ও নেপালি—একাধিক ভাষায় গান গেয়ে জুবিন তাঁর বহুমুখী প্রতিভা প্রমাণ করেছেন।

অভিনয় ও সুরকার

গায়ক ছাড়াও জুবিন গর্গ অসমের চলচ্চিত্রে অভিনেতা ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর অভিনীত ছবির মধ্যে Mission ChinaMon Jai উল্লেখযোগ্য। তিনি নিজস্ব ব্যান্ড “Sound Garden”-এর মাধ্যমে লাইভ পারফরম্যান্সে ভক্তদের মুগ্ধ করে চলেছেন।


অবদান ও সম্মাননা

অসমীয় আধুনিক গানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব জুবিন গর্গের। তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের যুবসমাজকে সঙ্গীতচর্চায় উৎসাহিত করেন।

তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একাধিক অসমীয়া ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, Global Indian Music Awards এবং অন্যান্য সম্মান অর্জন করেছেন।


ব্যক্তিত্ব ও উত্তরাধিকার
জুবিন গর্গ শুধু একজন গায়ক নন; তিনি অসমের সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের দূত। তাঁর কণ্ঠে মেলোডি, রক, ফোক ও ফিউশন—সব ধরনের সঙ্গীত এক অসাধারণ শক্তিতে ধ্বনিত হয়। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর গান শুনে অনুপ্রাণিত হচ্ছে, যা প্রমাণ করে যে তাঁর সঙ্গীত ধারা আগামী দিনেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক থাকবে।

জুবিন গর্গ এক নক্ষত্র


জুবিন গর্গের সঙ্গীত শুধু বিনোদনের উৎস নয়, এটি অসম ও ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও অংশ। তাঁর অবিরাম সৃষ্টিশীলতা ও কণ্ঠের যাদু তাঁকে সত্যিকারের এক সঙ্গীত আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *