রবি আড্ডায় পুরুষোত্তম সিংহ

মাইকেল মধুসূদন দত্তের দ্বিশতবর্ষ খুব ধুমধাম করে পালিত হল। মধুসূদনকে কেন্দ্র করে লেখা ঔপন্যাসিকরাও বললেন। মধুসূদন বিনির্মিত রাবণ চরিত্রের আরেক উত্তর আধুনিক সংস্করণ রিমি দে’র ‘রাবণ’ কাব্য নিয়ে তেমন কিছু বলা হল না।

কাব্যটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১২ খ্রিস্টাব্দে। অর্থাৎ ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সার্ধশতবর্ষ অতিক্রম করেছে তখন। সাহিত্যের বহমান সত্য হল অগ্রজ নির্মিত সত্যকে পরবর্তী লেখক কাউন্টার করবেন অথবা সেই সত্যকে ক্রমবর্ধিত পরিসরে এগিয়ে নিয়ে আসবেন। তবে অনুকরণ নয়। অবশ্যই যুগচিহ্নিত সাহিত্যরুচি, আধুনিকতার পরম্পরা অনুসারে। ‘রাবণ’ কাব্যটি অনেকেই হয়ত পড়েছেন। অথচ মধুসূদনের দ্বিশতবর্ষে কেউ নামটি উচ্চারণ করলেন না। সাহিত্যের বহমান প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে কীভাবে?

একটি কাব্যে অন্ধকারের এমন বহুমাত্রিক প্রয়োগ বাংলা কাব্যসাহিত্যে বিরল। রিমি দে অন্ধকারকে খণ্ডন করেছেন টুকরো টুকরো সত্যে, বৃত্তবন্দি অন্ধকারকে পাক খাইয়েছেন মানবজীবনের পরিস্থিতি সংলগ্ন বাস্তবতায়, কখনো বাস্তব-পরাবাস্তবকে অতিক্রম করে অন্ধকার নিয়ে সমীক্ষায় মত্ত হয়েছেন। সেই অব্যর্থ ক্রিয়া এমনই মাধুর্যময়, এমনই জটিল ব্যঞ্জনায় পরিপূর্ণ যা বাংলা কাব্যের দুরূহ সম্পদ। উত্তর আধুনিক সময়ের কবি রিমি দে। চিত্রকল্প, দৃশ্যসজ্জা নির্মাণে তিনি ধরাবাঁধা ফ্রেমে থাকেননি। পূর্ণযতিহীন বহমান গদ্যে দ্রুত পরিচ্ছেদ বদল ও সংক্ষিপ্ত অবয়বে কাব্যের ব্যঞ্জনাকে কোন পরিসর থেকে কোন পরিবেশে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব তার দুর্নিরীক্ষ্য নির্মাণ ‘রাবণ’ কাব্য। এ কাব্য মিতব্যয়ী শব্দ সৌরভের কাব্য। শব্দের সংশ্লিষ্ট সৌরভকে ব্যঞ্জনায় দ্রবীভূত করে জীবনের অন্ধকারসজ্জার কত বীভঙ্গ বাজানো সম্ভব তার পরিশীলিত কাব্য ‘রাবণ’।

By nb24x7

দিনদুনিয়ার খাসখবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *