রবি আড্ডায় সাদিক হোসেন
মোস্তাক চাচা এলেমদার মানুষ। পেশায় দর্জি, বুদ্ধিতে পালোয়ান। বয়স সত্তর পার। দিনে ৬০টার বেশি বিড়ি ফোঁকেন। ইতোমধ্যে ফুসফুসে একটা গ্রোথ ধরা পড়েছে। ফলে ধোঁয়া টানায় কার্ফু নেমেছে। কিন্তু চাচাও তেমনি – যুবক বয়সে চোখের উপর ভেজা রুমাল ঝুলিয়ে কতবার যে টিয়ারগ্যাসের মোকাবিলা করেছেন – সেকথা মহাভারতে আছে! ফলে সিটিস্ক্যানের রিপোর্ট পাবার পর লোকজনকে ডেকে ডেকে বলে বেড়াচ্ছেন – তোমাদের বিজ্ঞান বুর্জোয়াদের হাতে বিক্রি হয়ে গেছে!
ডাক্তার তিনি দেখাবেন না। সেদিন বললাম, বিজ্ঞানের আগে ‘তোমাদের’ কথাটা বলছেন কেন? বিজ্ঞান কবে আবার আমার হল? আমিই বা বিজ্ঞানের কে?
উত্তরে বললেন, কেন বারো ক্লাস অব্দি তো বিজ্ঞান পড়েছিলিস। পড়িসনি?
- সেতো বারো ক্লাসে ইংরাজিও পড়েছি। তাবলে ইংরাজিটাও আমাদের? আমিই বা ইংরাজির কে?
- সে তুই বারো কেন কুড়ি ক্লাস অব্দিও ইংরেজি নিয়ে ঘষলে কিছুই হত না।
- বিজ্ঞান নিয়ে ঘষলে হত?
- কথা সেইটা না। কথা হল তোদের বিজ্ঞান বুর্জোয়াদের হাতে বিক্রি হয়ে গেছে।
- বোঝাও দেখি।
- কী একটা সর্দিকাশি মাগভাতারে জ্বর এলো, একবছরে তার টিকাও বেরিয়ে গেল। চাঁদে মানুষ পাঠাল। মঙ্গল গ্রহ থেকে ৫লিটার মিনারেল ওয়াটার নিয়ে এলো। আর শালা এতোদিনে এইরকম কোনো ওষুধ বের করতে পারল না যেইটা লজেন্সের মতো চুষলে বিড়ির বিষটা পায়খানার সাথে বেরিয়ে যাবে!
- পায়খানার সাথে?
- পায়খানা না হোক, পেচ্ছাপের সাথেও তো বেরতে পারত।
- আচ্ছা, তারমানে বিড়ি খাওয়া ছাড়বেন না, তাই তো?
- শোন, মোরা ইউনিয়ন করা মানুষ। মোর সাথে বুর্জোয়াদের লেগে দালালি করতি আসবিনি!
কী আর বলব। পাঁচিলে তখন অবাক কাক কা-কা করছে।