অবিলম্বে ১,৯১১ জন গ্ৰুপ ডি কর্মীর সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করতে হবে এসএসসিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। বিচারপতি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, বেআইনি ভাবে দুর্নীতি করে এই সব প্রার্থীদের সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।’’ বিচারপতি এও জানিয়েছেন, যে প্রার্থীদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হবে, তাঁরা অন্য কোনও চাকরির পরীক্ষায় আর বসতে পারবেন না।
কারচুপির অভিযোগ OMR শিটে
শুক্রবার স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর আইনজীবী আদালতে স্বীকার করে নেন, ১,৯১১ জন গ্ৰুপ-ডি প্রার্থীকে অন্যায় ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তদানীন্তন এসএসসি-র চেয়ারম্যানের নাম জানতে চান। এসএসসি-র আইনজীবী জানান, সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এরপর কমিশন তথ্য যাচাই করে আদালতে হলফনামা দিয়ে স্বীকার করে, ওই সব প্রার্থীর OMR শিট-এ কারচুপি করে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।
ওয়েব সাইটে জারি বিজ্ঞপ্তি
শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েব সাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই প্রার্থীদের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিল এসএসসি। এ বার মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ওই প্রার্থীদের আইন মেনে অবিলম্বে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
কাদের কথায় এত বেআইনি নিয়োগ?
তিনি তদানীন্তন চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন কাদের কথায় এত বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, অবিলম্বে তাঁদের নাম জানাতে। তাঁদের নাম জানাতে হবে, কারা এই এর পরেই সুবীরেশকে এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি এও জানান, তাঁর পরিবারকে নিরাপত্তা দেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যাঁরা বেআইনি ভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, সিবিআই প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। আর এখন কোথাও নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যবহার করতে পারবেন না সুবীরেশ। এই প্রসঙ্গে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘এই দুর্নীতিতে প্রভাশালীরা থাকবেন না, তা হতে পারে? এই দুর্নীতির সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ে শেষ হবে না।’’
বৃহস্পতিবার আদালতে এসএসসির আইনজীবী দাবি করেছিলেন, গ্রুপ ডি নিয়োগের ক্ষেত্রে ২,৮১৯ জনের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করা হয়েছে। কমিশনের আইনজীবী এও জানিয়েছিলেন, তাদের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কারচুপি যে হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ওই ২,৮১৯ জনের মধ্যে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন ১,৯১১ জন। তাঁদেরই চাকরি বাতিলের সুপারিশ করল শুক্রবার হাই কোর্ট।
এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এসএসসির আইনজীবীকে বলেন, ‘‘আপনারাই যখন বলছেন ২,৮১৯ জনের ওএমআর শিটে কারচুপির বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, তা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আপনাদেরই করতে হবে। প্রথমে আলাদা ভাবে এই প্রার্থীদের নাম কমিশনের সাইটে আবারও প্রকাশ করুন। তার পর তাঁদের নিয়োগ বাতিল করুন।’’ আর এ জন্য কমিশনকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন বিচারপতি। তিনি এও জানিয়েছিলেন, শুক্রবার আদালতে কমিশন হলফনামা জমা দেওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ২,৮১৯ জনের নাম কমিশনের সাইটে আপলোড এবং সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হবে। তার ৫ মিনিটের মধ্যে ওই ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
http://www.westbengalssc.com/sscorg/wbssc/home/